Friday, October 2, 2015
ক্যান্সারের যেসকল লক্ষণ অবহেলা করেন বেশীরভাগ নারী
ক্যান্সার পুরো দেহে ছড়িয়ে গেলে তা চিকিৎসার মাধ্যমে নিরাময় করা একেবারেই সম্ভব হয়ে উঠে না। কিন্তু বেশীরভাগ মানুষই ক্যান্সারের লক্ষণ সম্পর্কে একেবারেই জ্ঞান রাখেন না বলে দেহে বাড়তে থাকে ক্যান্সারের কোষ। অন্য রোগের লক্ষণ মনে করে অবহেলা করতে থাকেন দিনের পর দিন। বিশেষ করে নারীরা নিজের রোগের কথা চেপে রাখেন বলে এমন পর্যায়ে রোগ ধরা পড়ে যা পরবর্তীতে নিরাময় করা একেবারেই সম্ভবপর হয়ে ওঠে না। অবহেলা করার কারণে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া পিছিয়ে পড়ে যার ফলে বেড়ে চলে মৃত্যুঝুঁকি। আজকে জেনে নিন ক্যান্সারের এমনই ঝুঁকিপূর্ণ ১৫ টি লক্ষণ।
১) ছোট ছোট নিঃশ্বাস
ছোট করে শ্বাস নেয়ার ব্যাপারটি অনেকেই অবহেলা করে থাকেন কারণ অতিরিক্ত পরিশ্রমের সাথে এর সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু কোনো কারণ ছাড়াই ছোট নিঃশ্বাস নেয়ার ব্যাপারটি এবং নিঃশ্বাসের সাথে শব্দ হওয়ার ক্যান্সারের লক্ষণ প্রকাশ করে।
২) দীর্ঘমেয়াদী কফ ও কাশি
অনেকেই এই দীর্ঘ সময়ের কফ-কাশিকে ব্রংকাইটিস বা অন্য সমস্যা মনে করে ভুল করে থাকেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞের মতে এই দীর্ঘমেয়াদী কাশির সমস্যা হতে পারে ফুসফুসে টিউমার বা লিউকমিয়ার লক্ষণ। সুরতাং সাবধান।
৩) খাবার গিলতে কষ্ট হওয়া
শুধুমাত্র টনসিল সমস্যার কারণেই খাবার গিলতে কষ্ট হয় না। যদি টনসিলের সমস্যা ছাড়াই খাবার গিলতে কষ্ট হয় তাহলে দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত কারণ এটি ফুসফুসের ক্যান্সার ও গলার ক্যান্সারের লক্ষণ প্রকাশ করে।
৪) মুখ ফুলে যাওয়া
মুখ ফুলে যাওয়ার ব্যাপারটি নিয়ে একেবারেই ভাবেন না কেউ কারণ ওজন বাড়া বা অতিরিক্ত ঘুমানোর কারণেও মুখ ফুলতে পারে। কিন্তু লাংস টিউমারের কারণেও হতে পারে এই সমস্যাটি। টিউমারের কারণে শিরা উপশিরা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে রক্ত সঞ্চালন হয় না যার কারণে এই মুখ ফুলে যাওয়ার সমস্যা দেখা দেয়।
৫) ঘন ঘন জ্বর হওয়া
লিউকমিয়ার কারণে দেহে রক্তের শ্বেত কণিকার উৎপাদনে সমস্যা হতে থাকে যার কারণে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একেবারেই কমে যায়। আর এর ফলে খুব ঘন ঘন জ্বর ও ইনফেকশনের সমস্যা দেখা দেয়।
৬) লসিকাগ্রন্থি প্রদাহ এবং ফুলে যাওয়া
গলা, বগলের নিচ এবং কুঁচকির লসিকাগ্রন্থিতে কোনো কারণ ছাড়াই প্রদাহ অনুভব করা এবং ফুলে যাওয়ার সমস্যা অবহেলা না করে দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
৭) ব্যথা পাওয়া ছাড়াই জখমের দাগ
ব্যথা পেলে রক্ত জমে জখমের দাগ হয়ে থাকে। কিন্তু যদি ব্যথা পাওয়া ছাড়াই দেহে জখমের দাগ দেখতে পান তাহলে তা অবশ্যই চিন্তার বিষয়। কারণ এটি লিউকমিয়ার লক্ষণ।
৮) তলপেট ব্যথা হওয়া
পিরিয়ডের কারণে তলপেটে অস্বস্তিকর ব্যথা হয়ে থাকে অনেকের। কিন্তু পিরিয়ডের কারণে না হয়ে এমনিতেই কোনো কারণ ছাড়া তলপেট ব্যথা হওয়া হতে পারে ওভারিয়ান ক্যান্সারের লক্ষণ।
৯) হুট করে অতিরিক্ত ওজন বেড়ে বা কমে যাওয়া
কোনো কারণ ছাড়াই হুট করে ওজন বেড়ে না কমে যাওয়ার বিষয়টি একেবারেই উড়িয়ে দেবেন না। বিশেষজ্ঞের মতে এটি ওভারিয়ান ও পরিপাকতন্ত্রের ক্যান্সারের লক্ষণ।
১০) পায়খানার সাথে রক্ত পড়া
পাইলস ছাড়াও এই সমস্যাটি কলোরেক্টাল ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে রোগ সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন।
১১) পিঠে ব্যথা
এই বিষয়টি বসার ভুল এবং অনেক বেশী বসে থাকার সমস্যা বলেই মনে করেন প্রায় সকলেই। কিন্তু এটি স্তন ও লিভার ক্যান্সারের কারণেও হতে পারে। অবহেলা করবেন না।
১২) স্তনের পরিবর্তন
স্তনের রঙ পরিবর্তন, ফুলে যাওয়া, টোল পড়া, গোটা অনুভব করা ইত্যাদি যে কোনো পরিবর্তনে একেবারেই অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন কারণ এগুলো স্তন ক্যান্সারের লক্ষণ।
১৩) পিরিয়ডের সমস্যা
অতিরিক্ত পিরিয়ড, পিরিয়ডের রঙ পরিবর্তন, পিরিয়ড সাইকেলের মাঝে রক্তপাত হওয়া অর্থাৎ ১০-১৫ দিনের মধ্যেই পিরিয়ড হওয়া ইত্যাদি সমস্যা ইউটেরিয়ান ও এন্ডোমেট্রিয়াল ক্যান্সারের লক্ষণ।
১৪) নখের পরিবর্তন
নখের ওপর কালো দাগ, আঁকাবাঁকা ডোরা ধরণের দাগ হলে অন্য কোনো সমস্যা বলে ভুল করবেন না। কারণ এটি ফুসফুসের ক্যান্সারের লক্ষণ।
১৫) ত্বকের সমস্যা
ত্বকের অস্বাভাবিকতা, কেটে গেলে সহজে ঠিক না হওয়া এবং ত্বকের খুব মারাত্মক ইনফেকশন হওয়ার মতো সমস্যা স্কিন ক্যান্সারের লক্ষণ।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment